স্বপ্ন যার ব্র্যান্ডিং
পড়াশোনা শেষ করেই যোগ দিয়েছিলেন বিজ্ঞাপনী সংস্থায়। আরও চ্যালেঞ্জিং কিছু করতে যোগ দিলেন ব্যাংকে। কেতাদুরস্ত নতুন কর্মজীবনেও চমত্কারভাবে নিজেকে মানিয়ে নিলেন। বর্তমানে তিনি কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স ও ব্র্যান্ডিংয়ের দায়িত্বে রয়েছেন ব্যাংক এশিয়াতে। শুধুই হিসাব-নিকাশ নয়, ব্যাংকেই জড়িয়ে থাকে নানা গল্প। আনোয়ার এহেতশামের সেই গল্প লিপিবদ্ধ করেছেন সাজেদুল ইসলাম শুভ্র, ছবি তুলেছেন দীপঙ্কর দীপু
‘প্রত্যন্ত এক গ্রামে একবার যেতে হলো ব্যাংকের কাজেই, দুপুর পেরিয়ে
বিকেল গড়ালেও দেখা নেই খাবারের! আশপাশে তরমুজের ক্ষেত। তরমুজ চাষিদের
আন্তরিক আহ্বানে ওই যাত্রায় ক্ষুধা মিটেছিল তরমুজ খেয়ে। দেশের এই দরিদ্র
কিন্তু মহত্ মানুষগুলোই যখন গ্রাহক হয়ে ব্যাংকে এসে আন্তরিক সেবা নিয়ে
বাড়ি ফেরেন, তখন হয়তো ব্যাংকের নামটা ঠিকমতো বলতে না পারলেও মুখের হাসিটা
লুকোতে পারেন না তারা। আর এ হাসিমুখগুলো দিয়েই প্রতিষ্ঠিত হয় একটা
ব্র্যান্ড’, ব্র্যান্ড ম্যানেজমেন্টের গোড়া নিয়ে বলছিলেন তরুণ ব্যাংকার
খন্দকার আনোয়ার এহতেশাম।
এহতেশাম ব্যবসায়ে প্রশাসনে স্নাতক করার পরপরই যোগ দিয়েছিলেন দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থায়। আর এখানে কাজের সুবাদেই অনেক প্রতিষ্ঠানের ব্র্যান্ডিং নিয়ে কাজ করতে হয়েছে তাকে। বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো কীভাবে তাদের ব্র্যান্ডকে পৌঁছে দিচ্ছে মানুষের কাছে, সেটার সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার সুযোগ হয় এহতেশামের। এই অভিজ্ঞতার বদৌলতে ডাক পান ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকে। সময়টা বছর চারেক আগে। মূলত সেসময়ই ব্র্যান্ড নিয়ে ভাবতে শুরু করেছে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো। ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক এহতেশামদের হাত ধরেই ভিন্নমাত্রায় আসে গ্রাহকের কাছে। হ্যাপি ব্যাংকিং—মূলমন্ত্রটাও প্রতিষ্ঠানটিতে যুক্ত হয় তখন থেকে।
বেশ কিছুদিন ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকে কাজ করার পর কিছুটা বিরতি নেন এহতেশাম। কারণ পরিবারকে একদমই সময় দিতে পারছিলেন না। সেটা পুষিয়ে নিতেই পুনরায় কাজ শুরু করেন বিজ্ঞাপনী সংস্থায়। তবে সেখানেও বেশিদিন কাটাতে পারেননি। আবারও ডাক পড়ে একটি ব্যাংকে। যোগ দিলেন ব্যাংক এশিয়াতে। যেহেতু দীর্ঘদিন ব্র্যান্ড ম্যানেজমেন্ট নিয়ে কাজ করেছেন, ব্যাংক এশিয়ার এই বিষয়গুলোর দায়িত্ব তার উপর এসে পড়ে। কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স আর ব্র্যান্ড ম্যানেজমেন্ট নিয়ে কাজ শুরু করেন এখানে। ততদিনে অবশ্য সহযোগী ব্যাংকগুলো পূর্ণ শক্তি নিয়ে মাঠে কাজ করছে। তার সামনে চ্যালেঞ্জ ছিল—এই ব্যাংকগুলোর সাথে সমান তালে চলা এবং ব্যাংক এশিয়ার নিজস্ব যে পরিচিতি রয়েছে সবার কাছে তা অক্ষুণ্ন রাখা। কাজ শুরু করলেন তিনি। ব্যাংক এশিয়ার ওয়েবসাইটটিকে আধুনিক করা হলো, সর্বোচ্চ সুবিধা দেওয়া হলো গ্রাহকদের। একইসাথে ঢাকা শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে ঝুলানো হলো বিলবোর্ড। ইসলামিক ব্যাংকিংয়ের ধারণাটা মানুষের মাঝে নতুন করে নিয়ে আসা হলো। এখন আরও নতুন নতুন বিষয় নিয়ে কাজ করছেন এহতেশাম। আসলে যতই কেতাদুরস্ত মনে হোক বাইরে থেকে, ব্র্যান্ডিংয়ের সাথে জড়িত পুরো বিষয়টাই শৈল্পিক, সৃজনশীলতার ্পূর্ণ বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে হয় এখানে। আর এই কাজটা আগ্রহের সাথেই করেছেন এহতেশাম।
এহতেশাম প্রজন্মকে বলেন, ‘তরুণরা সব সময় ভিন্ন কিছু নিয়ে ভাববে এটাই স্বাভাবিক। তবে কেউ সাফল্য নিশ্চিত করতে চাইলে তার উচিত যেকোনো কাজের পুরো বিষয়টা নিজেই রপ্ত করা। একটু খোলাসা করলে বিষয়টা এমন, ব্র্যান্ডিংয়ের জন্য দরকার পড়ে বিভিন্ন পরিসংখ্যান, নানা নকশা প্রণয়ন এবং প্রকাশনা। অভিজ্ঞতা থাকলে এই কাজগুলো সহজে করা যায়।’ এহতেশাম এ কৌশলেই কাজ করতে অভ্যস্ত, আর তাই কাজের স্বার্থে নিজেই ছুটে যান প্রত্যন্ত এলাকায়। মফস্বলের কোনো একটি শাখায় গ্রামীণ কোনো কৃষক একটা ছবি দেখে কী মন্তব্য করলেন, সেটা তার শোনা চাই সামনে থেকে। কারণ এই গ্রাহকদের জন্যই তো তাদের এত আয়োজন, এদের উপেক্ষার সুযোগ নেই। কেবল ব্যাংকিং সেক্টর না, যেকোনো কাজেই সরাসরি তাই জনসম্পৃক্ততার উপর জোর দিলেন তিনি। বললেন, ‘কাজের স্বার্থেই সবার সাথে যোগাযোগে আন্তরিক হওয়া দরকার, নিজের প্রতিশ্রুতি ধরে রাখা জরুরি।’
দেশের এ সময়ের ব্র্যান্ডিংয়ের ধারা সম্পর্কে তরুণ এই ব্যাংকার বলেন, ‘আমরা একটা অন্তবর্তী সময় পার করছি। আমাদের সেবা বিশ্বমানের হচ্ছে ধীরে ধীরে, একই সাথে ব্র্যান্ডিংও সেই পথে পা বাড়াচ্ছে। একটা সময় ব্র্যান্ডিং মানেই ছিল টিভি বিজ্ঞাপন—এই ধারণা দূর হয়েছে। বৃহত্ পরিসরে ব্র্যান্ডিং নিয়ে ভাবছে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো। কাজেই সৃজনশীলতা নিয়ে কাজের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। তাই নতুন নতুন আইডিয়াকে স্বাগত জানাচ্ছে সবাই।’ এহতেশামের কাছে জানতে চেয়েছিলাম, একজন ব্র্যান্ড এক্সপার্ট হতে গেলে তার কী কী বিষয়ে দক্ষ হওয়া চাই? তিনি বলেন, ‘ব্র্যান্ড এক্সপার্ট হতে চাইলে অবশ্যই চিন্তাভাবনায় অনেক তীক্ষ হতে হবে। কারণ অনেক সূক্ষ্ম বিষয় নিয়েই কাজ হয় এখানে। এর পাশাপাশি নিজেকে সময়ের সাথে আপডেট রাখার বিকল্প নেই। দেশে এবং আধুনিক বিশ্বে কখন কী ঘটছে, জানা থাকা চাই। আর প্রযুক্তির সাথে তারুণ্যে সম্পর্ক বরাবরই সাবলীল, তাই এ নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই।’ তবে এর পাশাপাশি এহতেশাম খুব জোর দিলেন সদিচ্ছার, আগ্রহের উপর, লক্ষ্যে পৌঁছার মানসিকতার উপর। ব্র্যান্ডিংয়ে নতুনদের উদ্দেশ্যে এহতেশাম বললেন, ‘নতুন ব্র্যান্ড নিয়ে কাজ করতে গেলে কতগুলো বিষয়ের উপর সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া জরুরি। প্রথমত দেখে নেওয়া দরকার, পণ্য বা সেবাটি কাদের জন্য? তাদের লক্ষ্যে রেখে কাজ করতে হবে। এর বাইরে পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি, অর্থনৈতিক অবস্থা, গ্রাহকের মানসিকতাও পর্যবেক্ষণ করা দরকার। আর যেহেতু প্রতিযোগিতার বাজার, তাই সমমানের অন্য প্রতিষ্ঠান কী কাজ করছে তা বিশ্লেষণ করতে হবে। আর এই বিশ্লেষণী ক্ষমতাই একজনকে অন্যজন থেকে আলাদা করে তোলে।’ নতুন প্রজন্মকে ব্র্যান্ড ম্যানেজমেন্টে স্বাগত জানিয়ে এহতেশাম বলেন, ‘নতুনদের ভিন্ন ধারার চিন্তা-ভাবনা নিয়েই কাজের সময় এখন। এটাই তাদের নিজেকে প্রমাণের সুযোগ।’ তরুণরা তাদের যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখবে এই ক্ষেত্রে, আশাবাদ তার। বন্দরনগরী চট্টগ্রামে শৈশব কাটানো এহতেশাম ব্যক্তিজীবনে পরিবারকে অনেক সময় দেওয়ার চেষ্টা করেন। তার বাবাও ছিলেন ব্যবসায়িক ঘরানার মানুষ। বড় ভাইও রয়েছেন একই ধরনের কর্মক্ষেত্রে। মা পুরোদস্তুর গৃহিণী, সামলে রেখেছেন পুরো পরিবারকে। সবমিলিয়ে পরিবার থেকে প্রেরণা পেয়েছেন সব সময়, সাথে যুক্ত হয়েছিল নিজের সদিচ্ছা। আর এ কারণেই আজ সাফল্যের পথ ধরে চলেছেন এহতেশাম। তার স্ত্রী সামিরা চৌধুরী মাস্টারমাইন্ডে শিক্ষকতা করছেন।
এহতেশাম ভবিষ্যতেও ব্র্যান্ডিং নিয়েই কাজ করতে চান। ব্র্যান্ডিং রিসার্চের কাজটাও তার ভালো লাগে খুব। বাংলাদেশের ব্র্যান্ডিং দিন দিন আরও আন্তর্জাতিক মানে পৌঁছাবে, আর সেই দিনও এই সাফল্যের একজন অংশীদার হয়ে থাকবেন খন্দকার আনোয়ার এহতেশাম, সবশেষে এই শুভকামনা রইল তার জন্য।
খন্দকার আনোয়ার এহতেশাম
ডাকনাম :এহতেশাম
মায়ের নাম :লুত্ফুন্নেসা বেগম
বাবার নাম :খন্দকার গিয়াস উদ্দিন
প্রথম স্কুল :বাওয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ, চট্টগ্রাম
প্রিয় মানুষ :বাবা, মা আর স্টিভ জবস
প্রিয় উক্তি :Stay Hungry, Stay Foolish.
প্রিয় পোশাক :আরামদায়ক যেকোনো কিছু
অবসর কাটে যেভাবে :বই পড়ে, পরিবারকে সময় দিয়ে
সাফল্যের সংজ্ঞা :চেষ্টা আর অধ্যবসায়।
এহতেশাম ব্যবসায়ে প্রশাসনে স্নাতক করার পরপরই যোগ দিয়েছিলেন দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থায়। আর এখানে কাজের সুবাদেই অনেক প্রতিষ্ঠানের ব্র্যান্ডিং নিয়ে কাজ করতে হয়েছে তাকে। বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো কীভাবে তাদের ব্র্যান্ডকে পৌঁছে দিচ্ছে মানুষের কাছে, সেটার সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার সুযোগ হয় এহতেশামের। এই অভিজ্ঞতার বদৌলতে ডাক পান ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকে। সময়টা বছর চারেক আগে। মূলত সেসময়ই ব্র্যান্ড নিয়ে ভাবতে শুরু করেছে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো। ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক এহতেশামদের হাত ধরেই ভিন্নমাত্রায় আসে গ্রাহকের কাছে। হ্যাপি ব্যাংকিং—মূলমন্ত্রটাও প্রতিষ্ঠানটিতে যুক্ত হয় তখন থেকে।
বেশ কিছুদিন ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকে কাজ করার পর কিছুটা বিরতি নেন এহতেশাম। কারণ পরিবারকে একদমই সময় দিতে পারছিলেন না। সেটা পুষিয়ে নিতেই পুনরায় কাজ শুরু করেন বিজ্ঞাপনী সংস্থায়। তবে সেখানেও বেশিদিন কাটাতে পারেননি। আবারও ডাক পড়ে একটি ব্যাংকে। যোগ দিলেন ব্যাংক এশিয়াতে। যেহেতু দীর্ঘদিন ব্র্যান্ড ম্যানেজমেন্ট নিয়ে কাজ করেছেন, ব্যাংক এশিয়ার এই বিষয়গুলোর দায়িত্ব তার উপর এসে পড়ে। কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স আর ব্র্যান্ড ম্যানেজমেন্ট নিয়ে কাজ শুরু করেন এখানে। ততদিনে অবশ্য সহযোগী ব্যাংকগুলো পূর্ণ শক্তি নিয়ে মাঠে কাজ করছে। তার সামনে চ্যালেঞ্জ ছিল—এই ব্যাংকগুলোর সাথে সমান তালে চলা এবং ব্যাংক এশিয়ার নিজস্ব যে পরিচিতি রয়েছে সবার কাছে তা অক্ষুণ্ন রাখা। কাজ শুরু করলেন তিনি। ব্যাংক এশিয়ার ওয়েবসাইটটিকে আধুনিক করা হলো, সর্বোচ্চ সুবিধা দেওয়া হলো গ্রাহকদের। একইসাথে ঢাকা শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে ঝুলানো হলো বিলবোর্ড। ইসলামিক ব্যাংকিংয়ের ধারণাটা মানুষের মাঝে নতুন করে নিয়ে আসা হলো। এখন আরও নতুন নতুন বিষয় নিয়ে কাজ করছেন এহতেশাম। আসলে যতই কেতাদুরস্ত মনে হোক বাইরে থেকে, ব্র্যান্ডিংয়ের সাথে জড়িত পুরো বিষয়টাই শৈল্পিক, সৃজনশীলতার ্পূর্ণ বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে হয় এখানে। আর এই কাজটা আগ্রহের সাথেই করেছেন এহতেশাম।
এহতেশাম প্রজন্মকে বলেন, ‘তরুণরা সব সময় ভিন্ন কিছু নিয়ে ভাববে এটাই স্বাভাবিক। তবে কেউ সাফল্য নিশ্চিত করতে চাইলে তার উচিত যেকোনো কাজের পুরো বিষয়টা নিজেই রপ্ত করা। একটু খোলাসা করলে বিষয়টা এমন, ব্র্যান্ডিংয়ের জন্য দরকার পড়ে বিভিন্ন পরিসংখ্যান, নানা নকশা প্রণয়ন এবং প্রকাশনা। অভিজ্ঞতা থাকলে এই কাজগুলো সহজে করা যায়।’ এহতেশাম এ কৌশলেই কাজ করতে অভ্যস্ত, আর তাই কাজের স্বার্থে নিজেই ছুটে যান প্রত্যন্ত এলাকায়। মফস্বলের কোনো একটি শাখায় গ্রামীণ কোনো কৃষক একটা ছবি দেখে কী মন্তব্য করলেন, সেটা তার শোনা চাই সামনে থেকে। কারণ এই গ্রাহকদের জন্যই তো তাদের এত আয়োজন, এদের উপেক্ষার সুযোগ নেই। কেবল ব্যাংকিং সেক্টর না, যেকোনো কাজেই সরাসরি তাই জনসম্পৃক্ততার উপর জোর দিলেন তিনি। বললেন, ‘কাজের স্বার্থেই সবার সাথে যোগাযোগে আন্তরিক হওয়া দরকার, নিজের প্রতিশ্রুতি ধরে রাখা জরুরি।’
দেশের এ সময়ের ব্র্যান্ডিংয়ের ধারা সম্পর্কে তরুণ এই ব্যাংকার বলেন, ‘আমরা একটা অন্তবর্তী সময় পার করছি। আমাদের সেবা বিশ্বমানের হচ্ছে ধীরে ধীরে, একই সাথে ব্র্যান্ডিংও সেই পথে পা বাড়াচ্ছে। একটা সময় ব্র্যান্ডিং মানেই ছিল টিভি বিজ্ঞাপন—এই ধারণা দূর হয়েছে। বৃহত্ পরিসরে ব্র্যান্ডিং নিয়ে ভাবছে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো। কাজেই সৃজনশীলতা নিয়ে কাজের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। তাই নতুন নতুন আইডিয়াকে স্বাগত জানাচ্ছে সবাই।’ এহতেশামের কাছে জানতে চেয়েছিলাম, একজন ব্র্যান্ড এক্সপার্ট হতে গেলে তার কী কী বিষয়ে দক্ষ হওয়া চাই? তিনি বলেন, ‘ব্র্যান্ড এক্সপার্ট হতে চাইলে অবশ্যই চিন্তাভাবনায় অনেক তীক্ষ হতে হবে। কারণ অনেক সূক্ষ্ম বিষয় নিয়েই কাজ হয় এখানে। এর পাশাপাশি নিজেকে সময়ের সাথে আপডেট রাখার বিকল্প নেই। দেশে এবং আধুনিক বিশ্বে কখন কী ঘটছে, জানা থাকা চাই। আর প্রযুক্তির সাথে তারুণ্যে সম্পর্ক বরাবরই সাবলীল, তাই এ নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই।’ তবে এর পাশাপাশি এহতেশাম খুব জোর দিলেন সদিচ্ছার, আগ্রহের উপর, লক্ষ্যে পৌঁছার মানসিকতার উপর। ব্র্যান্ডিংয়ে নতুনদের উদ্দেশ্যে এহতেশাম বললেন, ‘নতুন ব্র্যান্ড নিয়ে কাজ করতে গেলে কতগুলো বিষয়ের উপর সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া জরুরি। প্রথমত দেখে নেওয়া দরকার, পণ্য বা সেবাটি কাদের জন্য? তাদের লক্ষ্যে রেখে কাজ করতে হবে। এর বাইরে পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি, অর্থনৈতিক অবস্থা, গ্রাহকের মানসিকতাও পর্যবেক্ষণ করা দরকার। আর যেহেতু প্রতিযোগিতার বাজার, তাই সমমানের অন্য প্রতিষ্ঠান কী কাজ করছে তা বিশ্লেষণ করতে হবে। আর এই বিশ্লেষণী ক্ষমতাই একজনকে অন্যজন থেকে আলাদা করে তোলে।’ নতুন প্রজন্মকে ব্র্যান্ড ম্যানেজমেন্টে স্বাগত জানিয়ে এহতেশাম বলেন, ‘নতুনদের ভিন্ন ধারার চিন্তা-ভাবনা নিয়েই কাজের সময় এখন। এটাই তাদের নিজেকে প্রমাণের সুযোগ।’ তরুণরা তাদের যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখবে এই ক্ষেত্রে, আশাবাদ তার। বন্দরনগরী চট্টগ্রামে শৈশব কাটানো এহতেশাম ব্যক্তিজীবনে পরিবারকে অনেক সময় দেওয়ার চেষ্টা করেন। তার বাবাও ছিলেন ব্যবসায়িক ঘরানার মানুষ। বড় ভাইও রয়েছেন একই ধরনের কর্মক্ষেত্রে। মা পুরোদস্তুর গৃহিণী, সামলে রেখেছেন পুরো পরিবারকে। সবমিলিয়ে পরিবার থেকে প্রেরণা পেয়েছেন সব সময়, সাথে যুক্ত হয়েছিল নিজের সদিচ্ছা। আর এ কারণেই আজ সাফল্যের পথ ধরে চলেছেন এহতেশাম। তার স্ত্রী সামিরা চৌধুরী মাস্টারমাইন্ডে শিক্ষকতা করছেন।
এহতেশাম ভবিষ্যতেও ব্র্যান্ডিং নিয়েই কাজ করতে চান। ব্র্যান্ডিং রিসার্চের কাজটাও তার ভালো লাগে খুব। বাংলাদেশের ব্র্যান্ডিং দিন দিন আরও আন্তর্জাতিক মানে পৌঁছাবে, আর সেই দিনও এই সাফল্যের একজন অংশীদার হয়ে থাকবেন খন্দকার আনোয়ার এহতেশাম, সবশেষে এই শুভকামনা রইল তার জন্য।
খন্দকার আনোয়ার এহতেশাম
ডাকনাম :এহতেশাম
মায়ের নাম :লুত্ফুন্নেসা বেগম
বাবার নাম :খন্দকার গিয়াস উদ্দিন
প্রথম স্কুল :বাওয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ, চট্টগ্রাম
প্রিয় মানুষ :বাবা, মা আর স্টিভ জবস
প্রিয় উক্তি :Stay Hungry, Stay Foolish.
প্রিয় পোশাক :আরামদায়ক যেকোনো কিছু
অবসর কাটে যেভাবে :বই পড়ে, পরিবারকে সময় দিয়ে
সাফল্যের সংজ্ঞা :চেষ্টা আর অধ্যবসায়।
Comments
Post a Comment